নবুঅতের দ্বারপ্রান্তে নিঃসঙ্গপ্রিয়তা:
নবুঅতের লাভের সময়কাল যতই ঘনিয়ে আসতে লাগল, তাঁর মধ্যে নিঃসঙ্গপ্রিয়তার প্রবণতা ততই বাড়তে লাগল। এক সময় তিনি কা’বা গৃহ থেকে প্রায় ৬ কি.মি. উত্তর-পূর্বে হেরা পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত ৪ গজ আকারের ছোট গুহার নিরিবিলি স্থানকে বেছে নিলেন। তিনি বাড়ি থেকে পানি ও ছাতু নিয়ে যেতেন। ফুরিয়ে গেলে আবার আসতেন। কিন্তু বাড়িতে তাঁর মন বসতো না। কখনো কখনো সেখানে রাত কাটাতেন। পরপর ২টি রামাযান তিনি সেখানে ই’তেকাফে কাটান।
বয়স চল্লিশে পদার্পণ করল। রবীউল আউআলে জন্ম মাস থেকে শুরু হল ‘সত্য স্বপ্ন’ দেখা। তিনি স্বপ্নে যা-ই দেখতেন তাই-ই দিবালোকের মত সত্য হয়ে দেখা দিত। এভাবে চলল প্রায় ছয় মাস। যা ছিল ২৩ বছরের নবুঅতকালের ৪৬ ভাগের এক ভাগ। হাদীছে সম্ভবত একারনেই সত্য স্বপ্নকে নবুঅতের ৪৬ ভাগের এক ভাগ বলা হয়েছে। রাসূলের নির্জনতা ও একাগ্রতা এমনভাবে বেড়ে গেল যে, এখন আর তিনি বাড়ি ফিরতে চান না। ফলে খাদিজা হেরা গুহা থেকে অল্প দূরে অবস্থান করতে থাকলেন। এসে গেল রামাযান মাস। পূর্বের ন্যায় এবারেও তিনি পুরা রামাযান সেখানে এতেকাফে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন। খাদীজাও তাকে সেমতে খাদ্য সরবরাহ ও অন্যান্য সহযোগিতা করতে থাকলেন। স্বগোত্রীয় লোকদের পৌত্তলিক ও বস্তুবাদী ধ্যানধারণা তাকে পাগল করে তুলত। কিন্তু তাদের ফিরানোর কোন পথ তাঁর জানা ছিল না। মূলত হেরা গুহায় নিঃসঙ্গ অবস্থানের কিষয়টি ছিল আল্লাহর মতহী ব্যবস্থাপনারই অংশ।
নুযূলে কুরআন:
এভাবেই এসে গেল সেই শুভক্ষণ। ২১শে রামাযান সোমবারের ক্বদরের রাত্রি। ফেরেশতা জিবরীলের আগমন হল। ধ্যানমগ্ন মুহাম্মাদকে বললেন, ‘পড়’। বললেন, ‘আমি তো পড়তে জানিনা’। অতঃপর তাকে বুকে চেপে ধরলেন ও বললেন, পড়। কিন্তু একই জবাব, ‘পড়তে জানিনা’। এভাবে তৃতীয়বার আলিঙ্গন শেষে তিনি পড়তে শুরু করলেন,
(১) পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।
(২) সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।
(৩) পড় এবং তোমার প্রভু বড়ই দয়ালু
(৪) যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দান করেছেন।
(৫) তিনি মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন যা সে জানত না।
মাত্র পাঁচটি আয়াত নাযিল হ’ল। তারপর ফেরেশতা অদৃশ্য হয়ে গেল। প্রথম কুরআন নাযিলের এই দিনটি ছিল ৬১০ খৃষ্টাব্দের ১০ই আগস্ট সোমবার। ঐ সময় রাসূলের বয়স ছিল চান্দ্রবর্ষ হিসাবে ৪০ বছর ৬ মাস ১২ দিন এবং সৌরবর্ষ হিসাবে ৩৯ বছর ৩ মাস ২২ দিন।
নতুনের শিহরণ ও খাদীজার বিচক্ষণতা:
নতুন অভিজ্ঞতা লাভে শিহরিত মুহাম্মাদ দ্রুত বাড়ি ফিরলেন। স্ত্রী খাদিজাকে বললেন, ‘শিগগীর আমাকে চাদর মুড়ি দাও। চাদর মুড়ি দাও’। কিছুক্ষণ পর ভয়ার্তভাব কেটে গেলে সব কথা খাদীজাকে খুলে বললেন। রাসূলের নিকটে খাদীজা কেবল স্ত্রী ছিলেন না, ছিলেন তাঁর নির্ভরতার প্রতীক ও সান্ত্বনার স্থান। ছিলেন বিপদের বন্ধু। তিনি অভয় দিয়ে বলে উঠলেন, এটা খারাপ কিছু হতেই পারে না। ‘কখনোই না। আল্লাহর কসম! তিনি কখনোই আপনাকে অপদস্থ করতে পারেন না। আপনি আত্মীয়দের সঙ্গে সদাচরণ করেন, দুস্থদের বোঝা বহন করেন, নিঃস্বদের কর্মসংস্থান করেন, অতিথিদের আপ্যায়ন করেন এবং বিপদগ্রস্তকে সাহায্য করেন। অতঃপর তিনি তাঁকে সাথে নিয়ে চাচাতো ভাই আরাক্বা বিন নওফেলের কাছে গেলেন। যিনি ইনজীল কিতাবের আলেম ছিলেন এবং ঐ সময় চরম বার্ধ্যক্যে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সবকথা শুনে বললেন, ‘এ তো সেই ফেরেশতা যাকে আল্লাহ মূসার প্রতি প্রেরণ নাযির করেছিলেন। হায়! যদি আমি সেদিন তরুণ থাকতাম! হায়! যদি আমি সেদিন জীবিত থাকতাম, যেদিন তোমার কওম তোমাকে বহিষ্কার করব’। একথা শুনে চমকে উঠে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘ওরা কি আমাকে বের করে দিবে’? আরাক্বা বললেন, ‘হ্যা! তুমি যা নিয়ে আগমন করেছ, তা নিয়ে ইতিপূর্বে এমন কেউ আগমন করেননি, যার সাথে শত্রুতা করা হয়নি’। অতঃপর আরাক্বা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ‘যদি তোমার সেই দিন আমি পাই, তবে আমি তোমাকে যথাযোগ্য সাহায্য করব’।[1]
অহি-র বিরতিকাল:
আরাক্বা বিন নওফেলের কাছে সবকিছু শুনে নবী করীম (ছাঃ) আশা ও আশংকার দোলায় দোলায়িত হয়ে পুনরায় হেরা গুহায় ইতেকাফে ফিরে এলেন এবং পুনরায় অহি নাযিলের অপেক্ষা করতে লাগলেন। এভাবে দশদিন অতিবাহিত করে রামাযান শেষে পূর্বের নিয়মানুযায়ী ১লা শাওয়াল সকালে ইতেকাফ শেষ করে বাড়ি অভিমুখে রওয়ানা হলেন।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘এমন সময় আমি আসমান থেকে একটা আওয়ায পাই। তাকিয়ে দেখি যে, সেদিনের সেই ফেরেশতা আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী স্থানে কুরসীর উপরে বসে আছেন। আমি ভীত বিহ্বল হয়ে মাটিতে পড়ে যাবার উপক্রম হই। অকঃপর দ্রুত বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে বলি, আমাকে চাদর মুড়ি দাও, চাদর মুড়ি দাও, চাদর মুড়ি দাও’। কিন্তু না অল্পক্ষণের মধ্যেই গুরুগম্ভীর স্বরে ‘অহি’ নাযিল হল-
(১) হে চাদরাবৃত!
(২) উঠো, মানুষকে (আল্লাহর) ভয় দেখাও,
(৩) তোমার প্রভুর মাহাত্ম্য ঘোষণা কর,
(৪) তোমার পোশাক পবিত্র রাখো,
(৫) অপবিত্রতা পরিহার কর’ (মুদ্দাছছির ৭৪/১-৫)।
এরপর থেকে ‘অহি’ চালু হয়ে গেল।[2] ২১শে রামাযানের কদর রাতে প্রথম অহি নাযিলের পর থেকে এই দশদিনের বিরতিকালকে অহি-র বিরতিকাল বলা হয়। এটি আড়াই বা তিন বছরের জন্য ছিল না, যা প্রসিদ্ধ আছে। =(আর-রাহীক্ব পৃ: ৬৯)।
অহি-র প্রকারভেদ:
‘অহি’ অর্থ প্রত্যাদেশ, যা আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর নির্বাচিত বান্দার নিকটে হয়ে থাকে। হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম নবীদের নিকটে অহি-র সাতটি প্রকারভেদ বর্ণনা করেছেন:-
১. সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে। ৪০ বছর বয়সের রবীউল আউয়াল থেকে রামাযান মাস পর্যন্ত প্রথম ছয় মাস যা রাসূল (ছাঃ) প্রাপ্ত হয়েছিলেন।
২. অদৃশ্য থেকে হৃদয়ে অহি-র প্রক্ষেপন, যা জিব্রীল মাঝে-মধ্যে রাসূরের উপর করতেন।
৩. মানুষের রুপ ধারণ করে জিব্রীল এসে অহি বর্ণনা করে শুনাতেন। যেমন- একবার দেহিয়াতুল কালবীর রুপ ধারণ করে ছাহাবীগণের মজলিসে এসে রাসূলকে ঈমান, ইসলাম, ইহসান ও ক্বিয়ামাতের আলামত সম্পর্কে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে শিক্ষা দেন।
৪. ঘন্টাধ্বনির আওয়াজ করে অহি নাযিল হত। এ সময় রাসূল (ছাঃ) খুব কষ্ট অনুভব করতেন। প্রচণ্ড শতের দিনেও দেহে ঘাম ঝরত। উটের পিঠে থাকলে অধিক ভারবোধে উট বসে পড়ত। রাসূলের উরুর চাপে একবার এ অবস্থায় যায়েদ বিন ছাবিতের উরুর হাড় ভেঙ্গে যাবার উপক্রম হয়েছিল।
৫. জিব্রীল (আঃ) স্বরুপে এসে অহি প্রদান করতেন। এটি দু’বার ঘটেছে।
৬. মে’রাজ রজনীতে আসমানে অবস্থানকালে আল্লাহর সরাসরি অহি-র মাধ্যমে ছালাত ফরয করণ।
৭. আল্লাহ স্বীয় নবীর সঙ্গে সরাসরি ফেরেশতার মাধ্যম ছাড়াই পর্দার অন্তরাল থেকে কথা বলেন। যেমন- মূসা (আঃ) এর সঙ্গে তূর পাহাড়ে কথা বলার প্রমাণ কুরআনে বর্ণিত হয়েছে এবং শেষনবীর সঙ্গে মে’রাজ রজনীতে আরশের নিকটে কথোপকথনের প্রমাণ হাদীছে বিধৃত হয়েছে। =(আর-রাহীক্ব পৃ: ৭০)।
শিক্ষণীয় বিষয়:
১. সর্বপ্রথম নাযিলকৃত সূরা আলাক্বের প্রথম পাঁচটি আয়াতে পড়া ও লেখা এবং তার মাধ্যমে এমন জ্ঞান অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা আধ্যাত্মিক ও বৈষয়িক উভয় জ্ঞানের সমন্বয় সাধন করে।
২. আলাক্ব –এর চাহিদা পূরণে গৃহীত শিক্ষা যেন মানুষকে খালেক –এর সন্ধান দেয় এবং তাঁর প্রতি ইবাদত ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশে উদ্বুদ্ধ করে। সে বিষয়ে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
৩. সসীম মানবীয় জ্ঞানের সাথে অসীম এলাহী জ্ঞানের হেদায়েত যুক্ত না হওয়া র্পন্ত মানুষ কখনও প্রকৃত সত্য খুঁজে পাবে না – সে কথা স্পষ্টভাবেই সেখানে বলে দেওয়া হয়েছে। যেমন- মানুষকে নিজস্ব দৃষ্টিশক্তির সাথে চশমা, অনুবীক্ষণ বা দূরবীক্ষণ যন্ত্র যুক্ত হলে তার দৃষ্টিসীমা প্রসারিত হয়। বলা বাহুল্য, মানব জাতির প্রতি এটিই ছিল কুরআনের সর্বপ্রথম এলাহী আহবান।
৪. অতঃপর দশদিন বিরতির পর সূরা মুদ্দছছিরে নাযিলকৃত পাঁচটি আয়াতে পূর্বোক্ত অভ্রান্ত জ্ঞানের তথা তাওহীদের প্রচার ও প্রসারের গুরুদায়িত্ব ন্যাস্ত করা হয়েছে এক অপূর্ব অলংকার সমৃদ্ধ ভাষায়। চাদর ঝেড়ে ফেলে উঠে দাড়াও! ভোগবাদী মানুষকে শয়তানী থেকে বাঁচাও। সর্বত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা কর। শিরক ও জাহেলিয়াতের কলুষময় পোষাক ঝেড়ে মুছে সাফ করে ফেল। সকল অপবিত্রতা হতে মুক্ত হও। অর্থাৎ মনেুষের মনোজগতে ও কর্মজগতে আমূল সংস্কার সাধনের প্রতিজ্ঞা নিয়ে হে চাদরাবৃত মুহাম্মাদ! উঠে দাঁড়াও।
৫. একই সময়ে একই দরদভরা ভাষায় সূরা মুযযাম্মিল নাযিল করে রাসূল ও ছাহাবীগণের জন্য রাত্রির ছালাত তাহাজ্জুদ আবশ্যিক করে দেওয়া হয়। কেননা পরবর্তী সমাজ বিপ্লবের গুরুদায়িত্ব পালনের জন্য মানসিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি সম্পন্ন মানুষ তৈরি করা ছিল প্রধান কাজ। আর আধ্যাত্মিক মানস গঠনে তাহাজ্জুদের ছালাতের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
৬. দুনিয়া পূজারী অধঃপতিত জাতিকে উদ্ধারের যে পথ মুহাম্মাদ (ছাঃ) তালাশ করেছিলেন, তা তিনি পেয়ে গেলেন আল্লাহর অহি-র মাধ্যমে। আর তা হল এই যে, সার্বিক জীবনে অহি-র বিধান অনুসরণের মাধ্যেই কেবল মানবতার পূর্ণ বিকাশ সম্ভব এবং দুনিয়া পূজা নয়, আখেরাতে মুক্তিই হবে দুনিয়াবী জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। অন্য কোন পথে মানবতার মুক্তি নেই।
৭. সত্যিকারের মানবদরদী ব্যক্তির জন্য তাই ইসলামের যথাযথ অনুসরণ ব্যতীত অন্য কোন পথ খোলা নেই। আর ইসলাম ব্যতীত বর্তমান পৃথিবীতে আল্লাহ প্রেরিত কোন দ্বীন বা জীবন বিধানের অস্তিত্ব নেই।
এরপর থেকে শুরু হল দীর্ঘ তেইশ বছরের সংগ্রামী নবুঅতী জীবন এবং শেষ দশ বছরের মাদানী জীবন ছিল তাওহীদ ভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য দাওয়াত ও জিহাদের সমন্বিত জীবন।
ছালাতের নির্দেশনা:
যেকোন সংস্কার আন্দোলনের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন সংস্কারকের নিজ আক্বীদার মযবুতী। আর এই মযবুতী রক্ষার জন্য চাই নিয়মিত মনোজগতিক প্রশিক্ষণ। যা সংস্কারককে তার আদর্শমূলে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখে। সেকারণ আধ্যাত্ম সাধনার প্রাথমিক সিলেবাস হিসাবে মুহাম্মাদ (ছাঃ) –কে নবুঅতের শুরু থেকেই সকাল ও সন্ধ্যায় দু’বার ছালাত আদায়ের নির্দেশনা দান করা হয়। যেমন- আল্লাহ বলেন, “তুমি তোমার প্রভুর প্রশংসা জ্ঞাপন কর সন্ধ্যায় ও সকালে” (মুমিন/গাফের ৪০/৫৫)।
প্রথম কুরআন নাযিলের পর জিব্রীলের মাধ্যমে তিনি ওযূ ও ছালাত আদায় শিখেন[3]
হিজরতের স্বল্পকাল পূর্বে মে‘রাজ সংঘটিত হবার আগ পর্যন্ত ফজরের দু‘রাকাআত ও মাগরিবের দু‘রাকাআত করে ছালাত আদায়ের নিয়ম জারি থাকে। অতঃপর নিয়মিতভাবে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ফরয হয় মে‘রাজের রাত্রিতে। উল্লেখ্য যে, পূর্বেকার সকল নবীর সময়ে ছালাত, ছিয়াম ও যাকাতে ফরয ছিল। যদিও সেসবের ধরণ ও পদ্ধতি ছিল কিছুটা পৃথক।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও তাঁর সাথীগণ প্রথম তিন বছর গোপনে এই ছালাত আদায় করতেন এবং লোকদের গাছ, পাথর, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদির উপাসনা পরিত্যাগ করে আল্লাহর ইবাদত শিক্ষা দিতেন। তিনি কখনও কখনও সাথীদের নিয়ে পাহাড়ের গুহাতে গোপনে ছালাত আদায় করতেন। একদিন আবু তালিব স্বীয় পুত্র আলী ও ভাতিজা মুহাম্মাদকে এটা আদায় করতে দেখে কারণ জিজ্ঞেস করেন। সবকিছু শুনে বিষয়টির আধ্যাত্মিক গুরুত্ব উপলব্ধি করে তিনি তাদেরকে উৎসাহিত করেন। পরে (হে বস্ত্রাবৃত!) বলে সূরা মুযাম্মিল নাযিল করে আল্লাহ রাতে প্রায় সিকি অংশ তাহাজ্জুদের ছালাতে কাটিয়ে দেবার জন্য তাঁর নবী ও নবীর সাথীদের উপর ফরয করে দেন। পরবর্তীতে মে‘রাজে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ফরয হলে তাহাজ্জুদ নফল হয়ে যায়।
উৎস: নবীদের কাহিনী-৩
[1] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৮৪১ ‘ফাযায়েল’ অধ্যায়, ‘অহি-র সূচনা’ অনুচ্ছেদ; আর-রাহীক্ব পৃ: ৬৭-৬৮।
[2] মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৮৪৩।
[3] আহমাদ, দারাকুৎনী, মিশকাত হা/৩৬৬ ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়, ৩ অনুচ্ছেদ।