হাদীছটি মুসনাদে আহমাদ (হা/৬৫৭৫), আবুদাঊদ (হা/২৭৮৯), নাসাঈ (হা/৪৪৩৯), ছহীহ ইবনে হিববান (হা/৫৯১৪), ত্বাবারাণী মু‘জামুল কাবীর (হা/১৫৭, ১৫৮), সুনান দারাকুৎনী (হা/৪৭৪৯), হাকেম মুস্তাদরাক (হা/৭৫২৯), বায়হাক্বী সুনানুল কুবরা (হা/১৯০২৮-২৯) প্রভৃতি গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। শায়খ আলবানী দু’টি কারণে হাদীছটিকে যঈফ বলেছেন। (১) তিনি ঈসা বিন হেলাল আছ-ছাদাফীকে অজ্ঞাত ও অপ্রসিদ্ধ বলেছেন এবং (২) হাদীছটির মতনে কিছু অসংগতি রয়েছে (যঈফ আবুদাঊদ হা/৪৮২, ২/৩৭০ পৃ.; মিশকাত হা/১৪৭৯)। তবে শায়খ শু‘আইব আরনাঊত্ব রাবী ঈসা বিন হেলালকে শক্তিশালী ও প্রসিদ্ধ মন্তব্য করে হাদীছটির সনদ ‘শক্তিশালী’ বলেছেন (তাহকীক সুনান আবুদাঊদ হা/২৭৮৯, ৪/৪১৭)। তাহকীকে দেখা যায়, ঈসা বিন হেলাল অপ্রসিদ্ধ রাবী নন, বরং তাঁর থেকে বেশকিছু রাবী হাদীছ বর্ণনা করেছেন (তাহযীবুল কামাল, ক্রমিক ৪৪৬৯)। ইয়াকূব আল-ফাসাভী (২৭৭ হিঃ) ঈসা বিন হেলালকে মিসরবাসী ‘ছেক্বাহ’ তাবেঈদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন (আল-মা‘রিফাতু ওয়াত তারীখ ২/৫১৫)। ইবনু হাজার আসক্বালানী তাকে সত্যবাদী (صدوق) বলেছেন (তাক্বরীব, ক্রমিক ৫৩৩৭) এবং যাহাবী সহ একদল বিদ্বান তাকে ‘বিশ্বস্ত’ বলেছেন (আল-কাশিফ, ক্রমিক ৪৪০৫)। এছাড়া ইমাম তিরমিযী ঈসা বিন হেলাল বর্ণিত অন্য একটি হাদীছকে ‘ছহীহ’ বলেছেন (তিরমিযী হা/২৫৮৮)। যার অর্থ তিনিও ঈসা বিন হেলালকে শক্তিশালী মনে করেন। ইমাম নাসাঈ হাদীছটি বর্ণনা করলেও কোন ত্রুটি উল্লেখ করেননি। সুতরাং শু‘আইব আরনাউত্বের মন্তব্যটিই এখানে অগ্রাধিকারযোগ্য এবং হাদীছটি কমপক্ষে ‘হাসান’ পর্যায়ের। সম্ভবতঃ শায়খ আলবানী রাবী ঈসা বিন হেলাল সম্পর্কে ইয়াকূব আল-ফাসাভীর ‘তাওছীক’ লক্ষ্য করেননি। এছাড়াও তিনি হাদীছটির মতনে যে অসংগতির কথা বলেছেন সেটি মৌলিক ত্রুটি নয়। আল্লাহ সর্বাধিক অবগত।
রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী ‘তুমি (কুরবানীর দিনে) তোমার চুল ও নখ কাটবে, তোমার গোঁফ খাট করবে এবং নাভীর নীচের লোম ছাফ করবে। এটাই তোমার জন্য আল্লাহর নিকট পূর্ণ কুরবানী হিসাবে গৃহীত হবে’। অত্র হাদীছটির ব্যাপারে শু‘আইব আরনাউত্ব সনদ হাসান এবং আলবানী সনদ যঈফ বলেছেন। উপরোক্ত মতামতগুলির মধ্যে কোনটি অগ্রাধিকারযোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবে?
This entry was posted in কুরবানীর দিনে চুল নখ ও গোঁফ কাটার হাদীছটা কি ছহীহ? and tagged কুরবানী. Bookmark the permalink.