Tag Archives: মাযহাব
একটি জাতীয় দৈনিকে লেখা হয়েছে যে, ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) শতাধিক কিতাব লিখে ইসলামের মৌলিক সমস্যা সমাধানে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন বলেই ইসলাম মাযহাবী খুঁটির উপর দন্ডায়মান। বক্তব্যটির সত্যতা জানতে চাই।
এ বক্তব্য ভিত্তিহীন এবং ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর উপর চরম মিথ্যা অপবাদ। ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর নিজস্ব রচিত কোন কিতাব নেই। যে কিতাবগুলো তাঁর নামের সাথে সম্পৃক্ত করা হয় তার কোন ভিত্তি নেই। মূলতঃ দু’টি কিতাব তাঁর রচিত বলে উল্লেখ … Continue reading
ইবনু তায়মিয়াহ (রহ.) কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন? জনৈক ব্যক্তি বলেন, তিনি হাম্বলী মাযহাবকেই ফৎওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতেন। একথা কি সঠিক?
ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) একজন মুজতাহিদে মুত্বলাক ছিলেন। তিনি নির্দিষ্ট কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন না। বরং কুরআন ও হাদীছের ভিত্তিতে যে বিষয়টি সঠিক মনে হ’ত তিনি সে বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতেন। আল্লামা সুয়ূতী (রহঃ) ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ)-কে মুজতাহিদ বলে বিশেষিত করেছেন (ত্বাবাকতুল হুফফায … Continue reading
‘আত-তালখীছুল হাবীর’ গ্রন্থটির লেখক কে? গ্রন্থটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।
গ্রন্থটির প্রকৃত নাম ‘তালখীছুল হাবীর ফী তাখরীজি আহাদীছির রাফেঈ আল-কাবীর’। তবে সাখাভী ও বেক্বাঈ ‘আত-তালখীছুল হাবীর’ নাম বলেছেন। এটি সংকলন করেছেন হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ)। ৪ খন্ডে বিভক্ত এ গ্রন্থটি শাফেঈ মাযহাবের প্রসিদ্ধ ফিক্বহ গ্রন্থ ‘আশ-শারহুল কাবীর’ (যেটি ইমাম … Continue reading
প্রখ্যাত বিদ্বান ইমাম সুয়ূতী বর্ণনা করেন- ইমাম আবু হানীফা ৪০ বছর এশার ওযূ দিয়ে ফজরের ছালাত আদায় করেছেন (তাবয়ীজুস ছহীফাহ) এবং আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী (তাকমীলুল ঈমান) লিখেছেন আবু হানীফা ১০০ বার স্বপ্নে আল্লাহকে দেখেছেন। এর সত্যতা আছে কি?
উক্ত গ্রন্থসমূহে এসকল বর্ণনা পাওয়া গেলেও এর কোন গ্রহণযোগ্য ভিত্তি নেই। আলবানী বলেন, ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর ব্যাপারে যা বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি এশার ওযূতে চল্লিশ বছর ফজরের ছালাত আদায় করেছেন, তাতে তোমরা প্রতারিত হয়ো না। কারণ তাঁর থেকে এসকল ঘটনার … Continue reading
মাযহাবী ভাইয়েরা ইফতারের সময় তিন/চার মিনিট বিলম্ব করেন। এর কারণ কী?
সূর্য ডোবার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরও বাড়তি সতর্কতার দোহাই দিয়ে তারা এটা করেন। যা সুন্নাত পরিপন্থী। কেননা রাসূল (ছাঃ) বলেন, সূর্যাস্তের সাথে সাথে ছায়েম ইফতার করবে (বুখারী হা/১৯৫৪; মুসলিম হা/১১০০; মিশকাত হা/১৯৮৫)। শুধু তাই নয়, দেরী করে ইফতার করাকে নিন্দা করে … Continue reading
আমি আহলেহাদীছ হওয়া সত্ত্বেও আমার স্ত্রী মাযহাবী নিয়মে ছালাত আদায় করে। জনৈক আলেমকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি তালাক দেওয়ার নির্দেশনা দেন। এটা সঠিক কি?
এটা সঠিক নয়। তালাক দেওয়া কোন উত্তম সমাধান নয়। বরং স্ত্রীকে ছহীহ হাদীছের উপর আমল করার ব্যাপারে নছীহত করে বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে। স্নেহ-ভালবাসা দিয়ে তাকে সত্যের উপর ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা নারীদেরকে উত্তম নছীহত প্রদান … Continue reading
কনে দ্বীনদার, কিন্তু তার পরিবার মাযহাবী এবং দ্বীনের প্রতি গাফেল। এরূপ নারী বিবাহ করা যাবে কি?
এরূপ মেয়েকে বিবাহ করা যাবে। কারণ রাসূল (ছাঃ) বিয়েতে কনের দ্বীনকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮২, ৩০৯০)। তবে বংশীয়ভাবে ধার্মিক পরিবার হ’লে সেটাই সর্বোত্তম। এছাড়া শিরক-বিদ‘আতে অভ্যস্ত পরিবার হ’তে দূরে থাকা যরূরী।
‘ঈমান ছুরাইয়া নক্ষত্রের নিকটে থাকলেও আমার উম্মতের কিছু লোক বা তাদের এক ব্যক্তি তা অবশ্যই পেয়ে যাবে’। এ হাদীছ দ্বারা ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-কে বুঝানো হয়েছে কি?
না। বরং এর দ্বারা সালমান ফারেসী ও তাঁর জাতিকে বুঝানো হয়েছে। হাদীছটির অনুবাদ হ’ল, আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, আমরা নবী করীম (ছাঃ)-এর কাছে বসেছিলাম। এসময় তার উপর সূরা জুম‘আ অবতীর্ণ হ’ল, যার একটি আয়াত হ’ল- ‘এবং তাদের … Continue reading
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) সকল ফৎওয়াই কি ছহীহ হাদীছের উপর প্রদান করেছেন? যদি না করে থাকেন তবে তা অন্ধভাবে অনুসরণ করা যাবে কি?
অনুসরণীয় চার ইমামের মধ্যে ইমাম শাফেঈ (রহঃ) ব্যতীত বাকী তিনজনের কেউই ফিক্বহী বিষয়ে কোন গ্রন্থ রচনা করে যাননি। যদি ‘ফিক্বহে আকবর’ ও ‘মুসনাদে আবু হানীফা’-কে তাঁর কিতাব বলে ধরেও নেওয়া হয়, তাহ’লে বলা হবে যে, প্রথমোক্ত ছোট পুস্তিকাটি আক্বায়েদের উপরে … Continue reading
ইমাম বুখারী (রহঃ) কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন? অনেকেই বলে থাকেন যে ইমাম বুখারী সহ কুতুবে সিত্তাহর ইমামদের অধিকাংশই শাফেঈ মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। একথার কোন সত্যতা আছে কি?
ইমাম বুখারী (রহঃ) কোন মাযহাবের অনুসারী ছিলেন না। বরং তিনি একজন উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন মুহাদ্দিছ ও মুজতাহিদ ছিলেন। তিনি ইমাম শাফেঈ, মালেক ও আহমাদ (রহঃ)-এর ন্যায় হাদীছের অনুসরণ করতেন বলেই অধিকাংশ মাসআলায় তাঁদের সাথে ঐক্যমত পরিলক্ষিত হয়। অপরদিকে ইমাম আবু হানীফা … Continue reading
স্বামী স্ত্রীকে জোরপূর্বক মাযহাবী তরীকায় ছালাত আদায়ে বাধ্য করে। এক্ষণে উক্ত স্ত্রীর জন্য করণীয় কি?
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা সাধ্যমত আল্লাহকে ভয় কর’ (তাগাবুন ৬৪/১৬)। অতএব স্ত্রীকে ধৈর্যের সাথে সময় নিয়ে স্বীয় স্বামীকে বুঝাতে হবে এবং স্বামীর হেদায়াতের জন্য বেশী বেশী দো‘আ করতে হবে। কোন ভাবেই একত্রে থাকা সম্ভব না হলে স্ত্রী চাইলে খোলা-র মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন … Continue reading
মাযহাবী মসজিদে ছালাত আদায়ের ক্ষেত্রে পায়ে পা লাগাতে চাইলে পা টেনে নেয় এবং এটা মন্দ দৃষ্টিতে দেখে। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কি?
ছহীহ হাদীছে কাঁধের সাথে কাঁধ, পায়ের সাথে পা মিলিয়ে ফাঁক বন্ধ করে দাঁড়ানোর নির্দেশ এসেছে। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘তোমরা কাতার সমূহে দুই ইট পরস্পরে মিলানোর ন্যায় মিলে দাঁড়াও এবং দুই কাতারের মাঝের ফাঁক নিকটবর্তী রাখবে। কাঁধসমূহ সমান্তরাল রাখবে। … Continue reading
মাযহাব সাব্যস্ত করার জন্য মাযহাবপন্থী ভাইগণ একটি হাদীছ পেশ করে থাকেন যেখানে বলা হয়েছে যে, ‘তোমরা বড় জামা‘আতের অনুসরণ কর’। অর্থাৎ চার মাযহাবের অনুসরণ কর। এ হাদীছের সত্যতা জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রথমতঃ প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীছটি নিতান্তই যঈফ (ইবনু মাজাহ হা/৩৯৫০, সিলসিলা যঈফাহ হা/২৮৯৬; বিস্তারিত দ্রঃ আলবানী, মিশকাত হা/১৭৪-এর টীকা ‘ঈমান’ অধ্যায়, ‘কিতাব ও সন্নাহকে আঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ পৃঃ ৩০)। দ্বিতীয়তঃ হাদীছটি পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াতের বিরোধী, যেখানে আল্লাহ তা‘আলা রাসূল (ছাঃ)-কে উদ্দেশ্য … Continue reading
ইবাযীদের আক্বীদা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই।
এদের আক্বীদা ভ্রান্ত ফিরক্বা খারেজীদের আক্বীদার সাথে অধিক সামঞ্জস্যশীল। এই ভ্রান্ত মতবাদটি হিজরী ১ম শতকে বছরায় জন্মলাভ করে। আব্দুল্লাহ বিন ইবায আত-তামীমীর নামে মতবাদটির জন্ম হলেও আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ)-এর প্রখ্যাত ছাত্র জাবের বিন যায়েদ (২২-৯৩ হিঃ)-এর হাতেই মতবাদটি প্রসার … Continue reading
স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ীর সকলেই হানাফী হওয়ায় ছহীহ হাদীছের দাওয়াত দিলে সবাই দুর্ব্যবহার করে। আমাকে লুকিয়ে ছালাত আদায় করতে হয়। এক্ষণে আমার জন্য ‘খোলা’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কি?
এরূপ অবস্থায় ‘খোলা’ করে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। কারণ যথাযোগ্য কারণে স্বামী থেকে ‘খোলা’ করা অর্থাৎ মোহর ফিরিয়ে দিয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়া শরী‘আতসম্মত (বুখারী হা/৫২৭৩; মিশকাত হা/৩২৭৪)। মাযহাবী ভাইদের অনেকের মধ্যে গুরুতর সমস্যা রয়েছে। যেমন (১) আক্বীদাগত দিক থেকে তাদের … Continue reading
ছহীহ মুসলিমে এসেছে, চিরদিন আমার উম্মতের একটি দল হক-এর উপর কিতাল করবে…। এর অর্থ কি তারা সর্বদা যুদ্ধ করতে থাকবে? অথচ রাসূল (ছাঃ) জীবনের বহু সময় কিতাল বিহীন অবস্থায় অতিবাহিত করেছেন!
উক্ত হাদীছের উদ্দেশ্য এটা নয় যে, বিজয়ী দলটি সর্বদা কেবল সশস্ত্র যুদ্ধেই লিপ্ত থাকবে। বরং এর উদ্দেশ্য হ’ল বিজয়ী দল কখনোই জিহাদকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করবে না। বরং তারা তাদের স্বীয় বিজয়ী বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী হকের উপর আপোষহীন থাকবে এবং প্রয়োজনে কাফেরদের … Continue reading
অনেক আলেম বলে থাকেন, সরাসরি কুরআন হাদীছ অনুযায়ী বর্তমানে আমল করা যাবে না। কারণ কুরআন হাদীছ বুঝার বিষয় আছে। তাই চার ইমামের যেকোন একজনের অনুসরণ করতে হবে।
শরী‘আতের যেকোন আমল কুরআন ও ছহীহ হাদীছ মোতাবেক হওয়া আবশ্যক, কোন ইমাম বা অন্যকারো রায় অনুসারে নয়। তবে স্মর্তব্য যে, কুরআন-হাদীছের খুঁটিনাটি বিষয় বুঝা সকলের পক্ষে সম্ভব হয় না। এ জন্য বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের সহযোগিতা গ্রহণ করতেই হবে’ (নাহল ৪৩, … Continue reading
একটি কিতাবে লেখা আছে যে, ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) যখন ‘কাশফে’ থাকতেন, তখন তিনি ওযূর পানির সাথে গুনাহ ঝরতে দেখতেন। তাই কাশফে থাকাকালীন ওযূর পানি নাপাক বলে ফৎওয়া দিতেন। প্রশ্ন হ’ল, ‘কাশফ’ কি ? এটা কি শরী‘আতের কোন দলীল? এরূপ কথাবার্তায় যারা বিশ্বাস রাখে তারা কোন আক্বীদার অনুসারী?
প্রথমতঃ ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) সম্পর্কে এরূপ ভিত্তিহীন ঘটনা উল্লেখ করে তাঁকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে। কেননা তাঁর থেকে এরূপ কোন কিছুই বিশ্বস্ত সূত্রে প্রমাণিত নয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কাউকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন (ইবনু মাজাহ হা/৩০২৯; সিলসিলা ছহীহাহ … Continue reading