এটি দোষণীয় নয়। রাসূল (ছাঃ) ২৫ বছর বয়সে ৪০ বছর বয়সী বিধবা খাদীজা (রাঃ)-কে বিবাহ করেছিলেন। অন্যদিকে ৬ বছরের আয়েশার সাথে ৫৪ বছরের রাসূল (ছাঃ)-এর বিয়ে হয়েছিল (সীরাতুর রাসূল (ছাঃ) ৩য় মুদ্রণ ৭৬৩-৬৪ পৃ.)। অতএব ছেলে বা মেয়ে পরস্পরের বয়সে কম-বেশী হওয়া বিবাহের ক্ষেত্রে কোন অন্তরায় নয়।
আমার একটি ডিপিএস আছে। এখন মেয়াদ শেষে যদি সূদের অতিরিক্ত টাকা গরীবদের মধ্যে দান করে দেই, তবে মূল টাকা আমার জন্য হালাল হবে কি?
উক্ত মাসিক সঞ্চয় প্রকল্প বা ডিপিএস অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং অতিরিক্ত অর্থ নেকীর আশা ব্যতীত জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি হারাম উপার্জন করল, অতঃপর তা থেকে ছাদাক্বা করল, সে তার ছওয়াব পাবে না এবং হারাম উপার্জনের দায় তার উপরেই বর্তাবে (ছহীহ ইবনু হিববান, ছহীহুত তারগীব হা/১৭১৯)। তবে ডিপিএস খোলার কারণে মূল টাকা মালিকের জন্য হারাম হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘আর যদি তোমরা তওবা কর, তাহ’লে তোমরা তোমাদের মূলধনটুকু পাবে’ (বাক্বারাহ ২/২৭৮)।
পরীক্ষার্থীদের জন্য যে বিদায় অনুষ্ঠান করা হয়, এটা কি বিদ‘আতের অন্তর্ভুক্ত হবে?
ছাত্র-ছাত্রীদের উপদেশ ও পথনির্দেশনা দেওয়া এবং মন্দ কর্ম হ’তে সতর্ক করার জন্য বিদায় অনুষ্ঠান করায় কোন বাধা নেই। তবে অনুষ্ঠানটি কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক হ’তে হবে এবং শরী‘আত বহির্ভূত সকল কাজ হ’তে মুক্ত রাখতে হবে। রাসূল (ছাঃ) কোন সৈন্যদল অথবা কোন মেহমানকে বিদায় দানকালে তাক্বওয়ার উপদেশ দিতেন এবং তাদের জন্য দো‘আ করতেন (তিরমিযী, আবুদাঊদ; মিশকাত হা/২৪৩৫-৩৭)। আনাস (রাঃ) কুরআন খতম শেষে পরিবার-পরিজন ও সন্তানদের একত্রিত করতেন এবং তাদের জন্য দো‘আ করতেন (দারেমী হা/৩৪৭৪; আল-আছারুছ ছহীহাহ হা/১৪২)। বিদ্বানগণ উক্তরূপ অনুষ্ঠান বিষয়ে কোন আপত্তি তুলেছেন বলে জানা যায় না। অতএব এমন অনুষ্ঠানে বাধা নেই।
আমি বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান বিভাগে ৭ বছর যাবৎ কর্মরত আছি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি ও আমার সহকর্মীরা গান-বাজনা, নাটক, ধর্মীয়, সামাজিক সবধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করি। কালীপূজা সহ হিন্দুদের বিভিন্ন পূজা উপলক্ষে অনুষ্ঠান প্রযোজনা করতে হয়। এক্ষণে আমার এ চাকুরী করা জায়েয হবে কি?
উপরে বর্ণিত অধিকাংশ কার্যক্রমই শরী‘আত বিরোধী। এসব কাজে সহায়তার অর্থ শরী‘আত বিরোধী কাজে সহায়তা করা। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা নেকী ও আল্লাহভীরুতার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা কর। গোনাহ ও সীমালংঘনের কাজে পরস্পরকে সাহায্য করো না’ (মায়েদাহ ৫/২)। এর চেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার হ’ল, এর মাধ্যমে একদিকে যেমন চলমান গুনাহে জড়িত হ’তে হয়, অন্যদিকে এসব শুনে যারা গুনাহের শিকার হচ্ছে তাদের পাপের বোঝাও বহন করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কাউকে পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করে, তার জন্যও ঠিক সেই পরিমাণ গোনাহ রয়েছে, যা তার অনুসারীদের জন্য রয়েছে’ (মুসলিম হা/২৬৭৪; মিশকাত হা/১৫৮)। অতএব সম্ভব হ’লে কেবল নির্দোষ অনুষ্ঠানসমূহে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করতে হবে, নতুবা চাকুরী ছেড়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে বৈধ রূযীর পথ অনুসন্ধান করতে হবে।
আমাদের মসজিদের ইমাম ছাহেব রজব মাসের বিশেষ ছালাত-ছিয়ামসহ বিভিন্ন ইবাদতের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা পেশ করেছেন। এসব ইবাদত পালন করা যাবে কি?
রজব মাসের বিশেষ মর্যাদা বা বিশেষ কোন ইবাদত যেমন ছালাত-ছিয়াম ও যিকির-আযকারের ব্যাপারে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে, সবই যঈফ ও জাল। যেমন ‘যে ব্যক্তি রজব মাসে তিনটি ছিয়াম পালন করবে, তার জন্য আল্লাহ এক মাসের ছিয়াম লিখে দিবেন’। হাদীছটি জাল (আল–লা‘আলিল মাছনূ‘আহ ফিল আহাদীছিল মাউযূ‘আহ ২/১১৪–১১৫ পৃ.)। এছাড়া ‘পাঁচ রাতে দো‘আ ফেরত দেওয়া হয় না। রজব মাসের প্রথম রাত, মধ্য শা‘বানে, জুম‘আর রাত, ঈদুল ফিতর এবং কুরবানীর রাতের দো‘আ’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি জাল (ইবনু ‘আসাকির, আলবানী, সিলসিলা যঈফাহ হা/১৪৫২)।
ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, ‘ছালাতুর রাগায়েব’ নামে ১২ রাক‘আত ছালাত যা রজব মাসের প্রথম জুম‘আর দিন মাগরিব থেকে এশার মধ্যে পড়া হয় এবং মধ্য শা‘বানের রাতে যে ১০০ রাক‘আত ছালাত পড়া হয়, তা নিকৃষ্ট বিদ‘আত’ (আল–মাজমূ‘ ৪/৫৬)। তিনি আরো বলেন, এই ছালাতের আবিষ্কারককে আল্লাহ ধ্বংস করুন। এটি অজ্ঞতা ও ভ্রষ্টতায় পূর্ণ একটি ঘৃণিত বিদ‘আত (নববী, শরহ মুসলিম ৮/২০)।
ইমাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, ‘রজব মাসে ছিয়াম রাখা সংক্রান্ত সবগুলো বর্ণনা যঈফ; বরং মওযূ‘ বা জাল। বিদ্বানগণ এব্যাপারে একটি বর্ণনাকেও নির্ভরযোগ্য বলেননি’ (মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ২৫/২৯০)। ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন, রজব মাসে ছিয়াম পালন ও নফল ছালাত আদায়ের ব্যাপারে যে কয়টি হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তার সবই জাল (আল–মানারুল মুনীফ ৯৬ পৃ.)। অতএব রজব মাসের জন্য বিশেষ কোন ইবাদত নেই।
‘মসজিদে খায়েফে’র নীচে সত্তরজন নবীর কবর রয়েছে। বর্ণনাটির সত্যতা জানতে চাই।
উক্ত মর্মে মুসনাদে বাযযার ও ত্বাবারাণী কাবীরসহ কিছু গ্রন্থে একটি বর্ণনা এসেছে যার সনদ অত্যন্ত যঈফ এবং মতন মুযতারিব (আলবানী, তাহযীরুস সাজেদ মিন ইত্তিখাযিল কুবূরি মাসাজিদ ৬৮ পৃ.)। কারণ মসজিদে খায়েফে সত্তর জন নবীর কবর নেই। বরং সত্তর জন নবী মসজিদে খায়েফে ছালাত আদায় করেছেন। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মসজিদে খায়েফে সত্তর জন নবী ছালাত আদায় করেছেন যাদের মধ্যে মূসা (আঃ) ছিলেন অন্যতম (হাকেম হা/৪১৬৯; ছহীহাহ হা/২০২৩; ছহীহুত তারগীব হা/১১২৭; বিস্তারিত দ্রঃ ‘ছবি ও মূর্তি’ বই ৪৮ পৃ.)। অতএব এ ধরণের জাল ও যঈফ হাদীছ দ্বারা কবরের উপর মসজিদ নির্মাণের দলীল গ্রহণ করার কোন সুযোগ নেই।
অনেকে ছোট শিশুদের মসজিদে আনতে নিষেধ করেন। এ ব্যাপারে শরী‘আতের দৃষ্টিভঙ্গি কি?
ছালাতে শিশুদের সাথে করে নিয়ে যাওয়া উত্তম। এতে শিশুকাল থেকেই মসজিদে ছালাত আদায়ের অভ্যাস গড়ে ওঠে। সেকারণ নববী যুগে শিশুদের মসজিদে নিয়ে যাওয়ার প্রচলন ছিল। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) শিশুর ক্রন্দন শ্রবণের কারণে ছালাত সংক্ষিপ্ত করেছেন (বুখারী হা/৭০৯; মুসলিম হা/৪৭০)। তিনি তাঁর দুই নাতি হাসান ও হোসাইন-কে কোলে নিয়ে জুম‘আর খুৎবাও দিয়েছেন (আবুদাঊদ হা/১১০৯; ইবনু মাজাহ হা/২৯২৬)। উপরন্তু তিনি নাতনীকে নিয়ে জামা‘আতে ছালাত আদায় করেছেন। আবু ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে ইমামতি করতে দেখেছি, এমতাবস্থায় নাতনী উমামা বিনতে যয়নব তার কাঁধে ছিল। যখন তিনি রুকূতে যেতেন, তখন তাকে রেখে দিতেন এবং যখন সিজদা হ’তে উঠতেন, তখন তাকে (পুনরায় কাঁধে) ফিরিয়ে নিতেন (বুঃ মুঃ মিশকাত হা/৯৮৪ ‘ছালাত’ অধ্যায়)। একদিন রাসূল (ছাঃ) এশার ছালাতে আসতে দেরী করলে মসজিদে আগত নারী ও শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছিল (বুখারী হা/৫৬৬; মুসলিম হা/৬৩৮)। অতএব এটা প্রমাণিত যে, সেসময় শিশুরা নিয়মিত মসজিদে যেত। তবে কোন শিশুর অনিয়ন্ত্রিত আচরণ যদি মুছল্লীদের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে যায়, তবে ঐসব শিশুদের মসজিদে আনা থেকে বিরত থাকাই উত্তম। কেননা এতে মুছল্লীদের খুশু-খুযূ বিনষ্ট হয়। যেমনভাবে কাঁচা-পিয়াজ ও রসুন মুছল্লীদের জন্য কষ্টদায়ক হওয়ায় তা খেয়ে মসজিদে আসতে নিষেধ করা হয়েছে (উছায়মীন, লিকাউল বাবিল মাফতূহ ৩৭)। উল্লেখ্য যে, ‘তোমরা শিশুদের মসজিদ থেকে দূরে রাখো’ মর্মে বর্ণিত হাদীছটি অত্যন্ত যঈফ (ইবনু মাজাহ হা/৭৫০; যঈফুল জামে‘ হা/২৬৩৬)।
শিশুরা বিভিন্ন বিপদাপদে পতিত হ’লে যেমন উঁচু স্থান থেকে পড়ে গেলে ফেরেশতারা তাদের রক্ষা করে- এ কথার কোন সত্যতা আছে কি?
কেবল শিশু নয় বরং প্রত্যেক মানুষের হেফাযতের জন্য আল্লাহ ফেরেশতা নিযুক্ত করে রেখেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষের জন্য তার সামনে ও পিছনে পরপর আগত পাহারাদার ফেরেশতারা রয়েছে, যারা তাকে হেফাযত করে আল্লাহর হুকুমে’ (রা‘দ ১৩/১১)। আবু মিজলায বলেন, মুরাদ এলাকা থেকে জনৈক ব্যক্তি আলী (রাঃ)-এর কাছে এল। তখন তিনি ছালাতরত ছিলেন। তিনি বললেন, হে আলী! আপনি আপনার জন্য পাহারা নিযুক্ত করুন। কেননা মুরাদ এলাকার কিছু লোক আপনাকে হত্যা করতে চায়। জবাবে আলী (রাঃ) বললেন, নিশ্চয়ই প্রত্যেক ব্যক্তির সঙ্গে দু’জন করে ফেরেশতা থাকে, যারা তাকে হেফাযত করে। কিন্তু যখন তাক্বদীর এসে যায়, তখন তারা দূরে সরে যায়’ (ইবনু কাছীর, উক্ত আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য, সনদ মুরসাল)। সুতরাং এটা প্রমাণিত হয় যে, একজন ব্যক্তিকে দিনে ও রাতে কমপক্ষে চারজন করে ফেরেশতা পাহারা দেয়। যাদের দু’জন ডানে ও বামে মানুষের আমলনামা লিখে, অপর দু’জন মানুষের পিছনে ও সামনে থেকে পাহারা দিয়ে থাকে (বুখারী, হা/৫৫৫; ইবনু কাছীর, তাফসীর ঐ আয়াত, ৪/৪৩৭)।
আলী (রাঃ) রাতে দায়িত্ব পালন করায় তিনি ফজরের ছালাত দেরীতে পড়তেন। এ ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট অভিযোগ করা হ’লে তিনি তাকে দেরীতে ছালাত আদায়ের অনুমতি দেন। ঘটনাটির সত্যতা জানতে চাই।
উক্ত ঘটনা আলী (রাঃ)-এর সম্পর্কে নয়, বরং ছাফওয়ান বিন মু‘আত্ত্বাল (রাঃ)-এর ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে। রাসূল (ছাঃ) তাকে বিশেষ কারণে ফজরের ছালাত সূর্যোদয়ের পর আদায়ের অনুমতি দেন। ছাফওয়ানের স্ত্রী তার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ করেছিল। যার মধ্যে একটি ছিল যে, আমার স্বামী সূর্যোদয়ের পূর্বে কখনো ফজরের ছালাত পড়েন না। রাসূল (ছাঃ) এ ব্যাপারে ছাফওয়ানের বক্তব্য শুনতে চাইলে তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পরিবারের লোকেরা সর্বদা (পানি সরবরাহে) ব্যস্ত থাকে। এজন্য আমরা সূর্যোদয়ের পূর্বে ঘুম থেকে জাগতে পারি না। তিনি বলেন, তুমি যখনই জাগ্রত হবে, তখনই ছালাত পড়ে নিবে (আবুদাউদ হা/২৪৫৯; আহমাদ হা/১১৭৫৯; ছহীহাহ হা/২১৭২; ইরওয়া হা/২০০৪)।
কোন ব্যক্তি বিশেষ ওযরের কারণে এমন বাধ্যগত পরিস্থিতিতে পড়লে তা জায়েয হবে। কিন্তু এলার্ম বা যে কোন মাধ্যমে জাগ্রত হওয়ার সুযোগ থাকতেও ইচ্ছাকৃতভাবে ছালাতে দেরী করলে তার জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। কেননা এটা ছালাত বিনষ্টের শামিল (সূরা মারয়াম ৫৯; আল-মাঊন ৪-৫)। রাসূল (ছাঃ) তাঁর স্বপ্ন বর্ণনার এক পর্যায়ে এমন এক ব্যক্তির কথা বলেন, যে নিজ মাথা পাথর দিয়ে বিচূর্ণ করছিল, সে হ’ল ঐ ব্যক্তি যে কুরআন শিখে তা পরিত্যাগ করে এবং ফরয ছালাত আদায় না করে ঘুমিয়ে থাকে’ (বুখারী হা/১১৪৩, ৭০৪৭; মিশকাত হা/৪৬২৫ ‘স্বপ্ন’ অধ্যায়)।
সূদখোরের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়া এবং তাদের জন্য দো‘আ করা যাবে কি?
দাওয়াত গ্রহণে দোষ নেই। রাসূল (ছাঃ) ইহূদীর বাড়ীতে দাওয়াত খেয়েছেন ও তাদের হাদিয়া গ্রহণ করেছেন (বুখারী হা/২৬১৫–১৮, আবূদাঊদ, মিশকাত হা/৫৯৩১)। আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, তার নিকটে জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, আমার একজন প্রতিবেশী আছে যে সূদ খায় এবং সর্বদা আমাকে তার বাড়িতে খাওয়ার জন্য দাওয়াত দেয়।
এক্ষণে আমি তার দাওয়াত কবুল করব কি? জওয়াবে তিনি বললেন, ‘তোমার জন্য এটি বিনা কষ্টের অর্জন এবং এর গোনাহ তার উপরে পতিত হবে’ (মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/১৪৬৭৫, ইমাম আহমাদ আছারটি ‘ছহীহ’ বলেছেন; ইবনু রজব হাম্বলী, জামেঊল উলূম ওয়াল হিকাম (বৈরূত : ১৪২২/২ ০০১) ২০১ পৃ.)।
তবে উক্ত ব্যক্তির সংশোধন বা তাকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে যদি কেউ সাময়িকভাবে দাওয়াত গ্রহণ না করে, তবে সেটাই উত্তম হবে (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ২৮/২০৬)। যেমন লাল কাপড় পরিহিত জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-কে সালাম প্রদান করলে তিনি সালামের জওয়াব দেননি। কারণ তিনি লাল কাপড় পরিধান করা পুরুষদের জন্য পসন্দ করতেন না (হাকেম হা/৭৩৯৯; ত্বাবারাণী আওসাত্ব হা/১৩৫০, সনদ ছহীহ)।
আমার নবজাতক সন্তানের দুগ্ধপানের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। এমতাবস্থায় শিশুটি কি আমার মা তথা তার নানীর দুধ পান করতে পারবে?
এমতাবস্থায় শিশু নানীর দুধ পান করতে পারে। তবে এ কারণে তার মামা-খালারা তার দুধ ভাই বা দুধ বোন সাব্যস্ত হবে। ফলে সে তার মামাতো ও খালাতো ভাই বা বোনকে বিয়ে করতে পারবে না। যেমন রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর চাচা হামযাহ (রাঃ) পরস্পর দুধ ভাই ছিলেন। এজন্য হামযাহ (রাঃ)-এর মেয়ের সাথে রাসূল (ছাঃ)-এর বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হ’লে তিনি বলেন, আমি দুধ ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ে করতে পারি না (বুখারী হা/২৬৪৫; মুসলিম হা/১৪৪৬; মিশকাত হা/৩১৬১)।
ছালাত আদায়ের পর বুঝতে পারি যে ক্বিবলা ভুল হয়ে গেছে। উক্ত ছালাত কি পুনরায় আদায় করতে হবে?
অবহেলাবশতঃ এরূপ ভুল হয়ে থাকলে উক্ত ছালাত পুনরায় আদায় করতে হবে। কারণ ছালাত শুদ্ধ হওয়ার জন্য অন্যতম শর্ত হ’ল ক্বিবলা সঠিক হওয়া (বাক্বারাহ ২/১৫০; ইবনু হাযম, মুহাল্লা ২/২৫৮; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ৫/২৯৫, ফৎওয়া নং ১৭২৭৯)। তবে চেষ্টার পরেও যদি ক্বিবলা ভুল হয়ে যায়, তবে পুনরায় তা আদায় করতে হবে না। একদা কতিপয় ছাহাবী অন্ধকার রাতে কোন এক অজ্ঞাত স্থানে ছালাত আদায় করার সময় ভুলে ক্বিবলার বিপরীত দিকে ফিরে ছালাত আদায় করেন। অতঃপর তারা রাসূল (ছাঃ)-কে ঘটনাটি বর্ণনা করলে তিনি তা পুনরায় আদায়ের নির্দেশ না দিয়ে বললেন, তোমাদের ছালাত আদায় হয়ে গেছে। অতঃপর আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন আয়াত নাযিল করেন, ‘আর আল্লাহর জন্যই পূর্ব ও পশ্চিম। অতএব যেদিকেই তোমরা মুখ ফিরাও সেদিকেই রয়েছে আল্লাহর চেহারা। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বব্যাপী ও সর্বজ্ঞ’ (বাক্বারাহ ২/১১৫; তিরমিযী হা/২৯৫৭, ইরওয়া হা/২৯১, সনদ হাসান)।
গীবতের কাফফারা কি এবং এর পাপ থেকে মুক্তির উপায় কি?
গীবতের কাফফারা হচ্ছে যার গীবত করা হয়েছে তার নিকটে ক্ষমা চাওয়া এবং যাদের নিকট গীবত করা হয়েছে, তাদের নিকট গীবতের বদলে প্রশংসা করা। যেমন আবুবকর ও ওমর (রাঃ) একবার নিজেদের মধ্যে তাদের এক খাদেমের অনুপস্থিতিতে তার অধিক ঘুমানোর ব্যাপারে আলোচনা করেন। সামান্য এই গীবতের কারণে রাসূল (ছাঃ) পরে তাদেরকে বললেন যে, আমি তোমাদের উভয়ের দাঁতের মধ্যে তার গোশত দেখতে পাচ্ছি। অতঃপর তাঁরা রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি তাঁদেরকে তাদের খাদেমের নিকটে ক্ষমা চাইতে বলেন (সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬০৮)। তবে সরাসরি ক্ষমা চাইতে গেলে যদি ফিৎনা সৃষ্টি হয়, তাহ’লে নিজের জন্য ও তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং যে স্থানে তার কুৎসা রটনা করা হয়েছে সেখানে তার প্রশংসা করতে হবে (ইবনুল ক্বাইয়িম, আল–ওয়াবিলুছ ছাইয়েব, পৃ. ১৪১)।
পেশাব-পায়খানা করা অবস্থায় যদি হাঁচি আসে, তাহ’লে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা যাবে কি?
পেশাব-পায়খানা করা অবস্থায় হাঁচি আসলে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা যাবে না। কারণ এ সময় যিকর করা হ’তে নবী করীম (ছাঃ) বিরত থাকতেন। সেকারণ হাজত সম্পন্ন করার পর তিনি ‘গুফরা-নাকা’ বলে আল্লাহর নিকটে ক্ষমা চাইতেন (তিরমিযী হা/৭, সনদ ছহীহ; মিশকাত হা/৩৫৯)।
আমি নিরাপত্তা বাহিনীতে চাকুরীরত। বড় অফিসারকে দেখলে দাঁড়িয়ে সম্মান করতে হয়। শাস্তির ভয়ে বাধ্য হয়ে আমাকেও দাঁড়াতে হয়। এক্ষণে আমার করণীয় কি?
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যদি কেউ এতে আনন্দবোধ করে যে, লোকেরা তাকে দেখে স্থিরভাবে দন্ডায়মান থাকুক, তাহ’লে সে জাহান্নামে তার ঠিকানা করে নিল (তিরমিযী, আবুদাঊদ, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৪৬৯৯)। অতএব এই মন্দ প্রথা বন্ধের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। মুখে বা লিখিতভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। আল্লাহ বলেন, তোমরা সাধ্যমত আল্লাহ্কে ভয় কর (তাগাবুন ৬৪/১৬)। সম্ভব না হলে অন্ততঃ অন্তরে ঘৃণা রাখতে হবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭)। তবে যিনি আপনাকে এ পাপ কর্মে বাধ্য করছেন, তিনিই হবেন এজন্য মূল দায়ী।
নিজ পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ যথাযথভাবে বহন করলে কোন নেকী অর্জিত হয় কি?
ছওয়াবের আশা নিয়ে পরিবারের জন্য ব্যয় করলে তাতে ছাদাক্বার নেকী অর্জিত হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যখন কোন মুসলমান নিজ পরিবারের জন্য খরচ করে এবং তাতে ছওয়াবের আশা রাখে, তখন তার পক্ষে এটি ছাদাক্বা হিসাবে গণ্য হবে’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৯৩০ ‘শ্রেষ্ঠ দান’ অনুচ্ছেদ)। উম্মু সালামা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আবু সালামার সন্তানদের জন্য খরচ করায় আমার ছওয়াব হবে কি? তারা তো আমারই সন্তান। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তাদের জন্য খরচ কর। এতে তোমার ছওয়াব হবে, যে পরিমাণ তুমি খরচ করবে’ (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৮৩৭)। তিনি বলেন, সর্বোত্তম ব্যয় হচ্ছে ঐ অর্থ (দীনার) যা ব্যক্তি তার নিজের পরিবারের জন্য ব্যয় করে (মুসলিম হা/৯৯৪; মিশকাত হা/১৯৩২)।
পবিত্র কুরআন মুখস্থ ও দেখে তেলাওয়াত করার মধ্যে ছওয়াবের কোন তারতম্য আছে কি?
কোন তারতম্য নেই। কুরআন দেখে পড়া হোক বা মুখস্থ পড়া হোক প্রতি হরফে দশটি করে নেকী হবে (তিরমিযী হা/২৯১০; মিশকাত হা/২১৩৭)। উল্লেখ্য, কুরআন মূল মুছহাফ দেখে পাঠ করার পৃথক ফযীলত সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছের কোনটি যঈফ, কোনটি জাল (সিলসিলা যঈফাহ হা/৩৫৬, ১৫৮৬, ১৭১০)।
সমকামিতা কোন পর্যায়ভুক্ত পাপ? এর শাস্তি কি যেনার শাস্তির অনুরূপ?
সমকামিতা অত্যন্ত ঘৃণ্য পাপ এবং কবীরা গুনাহ। এই পাপের কারণেই বর্তমান পৃথিবীতে এইড্স-এর মত মরণ ব্যধি ছড়িয়ে পড়েছে। এ অপরাধের কারণে বিগত যুগে আল্লাহ তা‘আলা কওমে লূতকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন (আ‘রাফ ৭/৮০–৮৪; হিজর ১৫/৭২–৭৬)। এর শাস্তি হ’ল সমকামী উভয়কে হত্যা করা। ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা যাকে লূত (আঃ)-এর সম্প্রদায়ের মত পুরুষে পুরুষে অপকর্ম করতে দেখবে তাদের উভয়কে হত্যা কর (তিরমিযী হা/১৪৫৬; আবুদাঊদ হা/৪৪৬২; মিশকাত হা/৩৫৭৫)। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তা‘আলা কওমে লূতের ন্যায় অপকর্মকারীদের প্রতি লা‘নত করেছেন, তিনি একথাটি তিনবার বললেন (আহমাদ হা/২৯১৫; ছহীহাহ হা/৩৪৬২)। তবে এ শাস্তি কার্যকর করার দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীলদের (কুরতুবী)। না করলে সরকার গোনাহগার হবে।
ওয়ায মাহফিল, ইসলামী ক্লাস ইত্যাদি চলা অবস্থায় আযানের জবাব দেওয়া বা আযানের দো‘আ পাঠ করার বিধান কি?
আযানের জওয়াব দেওয়া সুন্নাত। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘তোমরা যখন আযান শুনবে তখন মুওয়াযযিন যা বলে তোমরাও তাই বল’ (বুখারী হা/৬১১; মুসলিম হা/৩৮৩)। যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে আযানের উত্তর দিবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে (মুসলিম হা/৩৮৫; মিশকাত হা/৬৫৮)। অতএব যিনি যে অবস্থায় থাকবেন, সে অবস্থায় আযানের জওয়াব দেওয়া কর্তব্য। উল্লেখ্য যে, একাধিক আযানের মধ্যে যেকোন একটির উত্তর দিলেই সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।
জনৈক বক্তা বলেন, দো‘আর পর মুখমন্ডল মাসাহ করা সুন্নাত। এর বিশুদ্ধতা জানতে চাই।
‘আল্লাহর নিকট যখন কিছু চাইবে, তখন দু’হাত প্রসারিত কর এবং দো‘আর শেষে উভয় হাত দ্বারা মুখমন্ডল মাসাহ কর’ মর্মে বর্ণিত হাদীছগুলি যঈফ (ইবনু মাজাহ হা/১১৮১; বায়হাক্বী, মিশকাত হা/২২৫৫; ইরওয়া হা/৪৩৩–৩৪; উছায়মীন, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ১৪/১৫৭; ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ২২/৫১৯)।
আলবানী বলেন, দো‘আর পরে দু’হাত মুখে মাসাহ করা সম্পর্কে কোন ছহীহ হাদীছ নেই (মিশকাত হা/২২৫৫–এর হাশিয়া ২/৬৯৬ পৃ.)।
কবরবাসীকে সালাম দিলে তারা কিভাবে উত্তর দিয়ে থাকে?
কবর দিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় মাইয়েত যেমন তার স্বজনদের জুতার আওয়াজ শুনতে পায় (বুখারী হা/১৩৩৮; মুসলিম হা/২৮৭০; মিশকাত হা/১২৬), তেমনি কবরবাসীর উদ্দেশ্যে সালাম দিলে ফেরেশতাগণ তাদের রূহে সালাম পৌঁছে দেন এবং তারাও সালামের জবাব দেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন পরিচিত কোন কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে সালাম দিলে সেও তাকে চিনে এবং তার সালামের জবাব দেয়। আর যখন কোন অপরিচিত কবরের পাশ দিয়ে সালাম দিয়ে অতিক্রম করে, তখন সেও তার সালামের জবাব দেয়’ [(বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৯২৯৬; ইবনু আব্দিল বার্র, আল–ইস্তিযকার ১/১৮৫; ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ২৪/২৯৭; ইবনুল ক্বাইয়িম, আর–রূহ, পৃ. ৫; উছায়মীন, মাজমূ‘ ফাতাওয়া, ক্রমিক ৩০৭, ২/২৪৪ পৃ.। ইরাক্বী, ইবনু তায়মিয়াহ, ইবনু আব্দিল বার্র, শাওকানী প্রমুখ বিদ্বানগণ হাদীছটি ছহীহ বলেছেন। তবে আলবানী একে যঈফ বলেছেন (সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৪৯৩)]।
রূহ ফিরিয়ে দেওয়া ও সালামের জওয়াব দেওয়া বিষয়গুলি বরযখী জীবনের বিষয়। তার আকৃতি–প্রকৃতি নির্ধারণ করা কারু পক্ষে সম্ভব নয়। অতএব জীবিতদের জন্য করণীয় হ’ল রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশ মোতাবেক কবরবাসীকে সালাম দেওয়া (মুসলিম হা/২৪৯; ইবনু মাজাহ হা/৪৩০৬; মিশকাত হা/২৯৮)।
হাশরের মাঠে রাসূল (ছাঃ)-এর সুফারিশ ছাড়া কেউ জান্নাতে যেতে পারবে কি?
রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আত ছাড়া বিচার কার্যই শুরু হবে না (বুখারী হা/১৯৪; মুসলিম হা/১৯৩)। তাই তাঁর শাফা‘আত ব্যতীত জান্নাতেও যাওয়া যাবে না। রাসূল (ছাঃ) বলেন, আমি প্রথম ব্যক্তি যে লোকদের জান্নাতে প্রবেশ সম্পর্কে আল্লাহর নিকট শাফা‘আত করব (মুসলিম হা/১৯৬; মিশকাত হা/৫৭৪৪)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আমিই সবার আগে জান্নাতের কড়া নাড়বো (মুসলিম হা/১৯৬; মিশকাত হা/৫৭৪২)।
অবাধ্যতা ও মন্দ আচরণের কারণে স্ত্রীকে প্রহার করা যাবে কি?
হালকা প্রহার করা যাবে। তবে তার পূর্বে উপদেশ দেওয়া, বিছানা পৃথক করা ইত্যাদি পদক্ষেপ নিতে হবে। আল্লাহ বলেন, সতী-সাধ্বী স্ত্রীরা হয় অনুগত এবং আল্লাহ যা হেফাযত করেছেন, আড়ালেও (সেই গুপ্তাঙ্গের) হেফাযত করে। আর যদি তোমরা তাদের অবাধ্যতার আশংকা কর, তাহ’লে তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের বিছানা পৃথক করে দাও এবং (প্রয়োজনে) প্রহার কর (নিসা ৪/৩৪)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মহিলাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। কারণ তাদেরকে তোমরা আল্লাহর আমানত হিসাবে গ্রহণ করেছ। আল্লাহর কালেমার সাহায্যে তাদের লজ্জাস্থানকে বৈধ করেছ। তাদের উপর তোমাদের অধিকার হ’ল, তারা এমন কাউকে তোমাদের বিছানা মাড়াতে দেবে না, যাকে তোমরা অপসন্দ কর। এমন করলে তাদেরকে হালকাভাবে প্রহার কর। আর প্রচলিত নিয়মে তাদের খাওয়া-পরার দায়িত্ব তোমাদের উপর (মুসলিম হা/১২১৮; মিশকাত হা/২৫৫৫)।
ছহীহ মুসলিমের একটি হাদীছে কারো আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বলা হয়েছে। এক্ষণে রাষ্ট্রীয় আইন-আদালত ও প্রশাসন থাকা অবস্থায় এটা জায়েয হবে কি?
এ ব্যাপারে বর্ণিত হাদীছটি হ’ল– জনৈক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! যদি কেউ আমার সম্পদ ছিনিয়ে নিতে উদ্যত হয় তবে আমি কি করব? রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি তাকে তোমার সম্পদ নিতে দিবে না। লোকটি বলল, যদি সে আমার সাথে এ নিয়ে লড়াই করে? রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমিও তার সাথে লড়াই করবে। লোকটি বলল, যদি সে আমাকে হত্যা করে? রাসূল (ছাঃ) বললেন, তাহ’লে তুমি শহীদ বলে গণ্য হবে। লোকটি বলল, আর যদি আমি তাকে হত্যা করি? রাসূল (ছাঃ) বললেন, তাহ’লে সে জাহান্নামী (মুসলিম হা/১৪০; মিশকাত হা/৩৫১৩)।
উক্ত হাদীছে আত্মরক্ষা বা ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষার অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে। যা প্রত্যেক মানুষের জন্মগত অধিকার। সকল ধর্ম ও সকল আইনে এটা সিদ্ধ। অতএব কেউ যদি কারো সম্পদ ছিনিয়ে নিতে চায়, অপমান করে অথবা হত্যা করতে উদ্যত হয়, সেক্ষেত্রে আত্মরক্ষার্থে তৎক্ষণাৎ তার উপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করায় কোন বাধা নেই। তবে এক্ষেত্রে পূর্ণ ইনছাফ বজায় রাখা আবশ্যক (আল–মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়াহ ৩২/৩১৮; উছায়মীন, লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ ১৩/৮২)। এর দ্বারা সবক্ষেত্রে আইন হাতে তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
আল্লাহ ও মুহাম্মাদ লিখা লাশ বহনকারী খাটলী বিক্রয় করা যাবে কি?
খাটলীতে আল্লাহ ও মুহাম্মাদ নাম বা কুরআনের কোন আয়াত লেখা যাবে না (ইবনুল হুমাম হানাফী, ফাৎহুল ক্বাদীর ১/১৬৯; উছায়মীন, লিক্বাউল বাবিল মাফতূহ ১৩/১৯৭; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ৪/৫৮)। অতএব এরূপ খাটলী ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। এর পরিবর্তে এসব নামহীন খাটলীর ব্যবস্থা করতে হবে।
সালাম ফিরানোর ক্ষেত্রে ইমাম উভয় সালাম না প্রথম সালাম শেষ করার পর মুক্তাদী সালাম ফিরাবে?
ইমামের পিছে পিছে সালাম ফিরাবে। রাসূলুললাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘ইমাম নিযুক্ত করা হয় তাকে অনুসরণের জন্য’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১১৩৯)। তিনি বলেন, হে লোকসকল! আমি তোমাদের ইমাম। সুতরাং তোমরা রুকূ, সিজদা, ক্বিয়াম ও সালাম কোন কিছুই আমার পূর্বে করবে না’ (মুসলিম হা/৪২৬; মিশকাত হা/১১৩৭)। ইতবান ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর সঙ্গে ছালাত আদায় করেছি। তিনি যখন সালাম ফিরান তখন আমরাও সালাম ফিরাই (বুখারী হা/৮৩৮)। অতএব ছালাতের প্রত্যেকটি কাজ শুরু করতে হবে ইমাম শুরু করার পর।
ফজরের পর ঘুমানোর ব্যাপারে শরী‘আতে কোন নিষেধাজ্ঞা আছে কি? এসময় মানুষের রিযিক বণ্টন করা হয় মর্মে কোন দলীল আছে কি?
ফজরের পর ঘুমানোর ব্যাপারে কোন নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত হয়নি। আর এসময় রিযিক বণ্টনের বিষয়ে যে ক’টি হাদীছ ও আছার বর্ণিত হয়েছে, তার সবগুলো যঈফ (যঈফাহ হা/৫১৭০, ৬৯৯১; যঈফুত তারগীব হা/১০৪৫–১০৪৮; যঈফুল জামে‘ হা/৮১৮)। তবে বিভিন্ন দলীলের মাধ্যমে বুঝা যায় যে, শরী‘আতে ফজরের পর ঘুমানোর বিষয়টি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন রাতকে বিশ্রাম এবং দিনকে জীবিকার্জনের জন্য সৃষ্টি করেছেন (নাবা ৭৮/১০–১১)। এছাড়া রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘হে আল্লাহ তুমি আমার উম্মতের জন্য ভোরের কর্মের মধ্যে বরকত দান করো। বর্ণনাকারী বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন কোথাও ক্ষুদ্র সেনাদল বা বৃহৎ সৈন্যবাহিনী পাঠাতেন তখন তাদেরকে দিনের প্রথমাংশে পাঠাতেন। রাবী ছাখার আল-গামেদী ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনি তার ব্যবসাদলকে দিনের শুরুতেই পাঠিয়ে দিতেন। ফলে তিনি ধনী হন এবং তার সম্পদ বৃদ্ধি পায় (আবুদাঊদ হা/২৬০৬; মিশকাত হা/৩৯০৮; ছহীহুল জামে‘ হা/১৩০০)।
ফজরের পর সফরে বের হয়ে মাগরিবের পর সফর শেষ হয়। এর মধ্যকার যোহর ও আছর ছালাত মাগরিবের ছালাতের সাথে পড়তে হবে? না ফজরের সময় এক সাথে সকল ছালাত পড়ে নিয়ে সফরে বের হ’তে হবে?
যোহর ও আছরের ছালাত কোন বিরতিস্থলে বা যানবাহনে জমা ও ক্বছর করবে (আবুদাঊদ হা/১২০৮; মিশকাত হা/১৩৪৪; মুসলিম হা/৬৮৬; মিশকাত হা/১৩৩৫)। সুযোগ না মিললে পরবর্তী ওয়াক্তের সাথে ক্বাযা আদায় করে নিবে। কিন্তু পথিমধ্যে ছালাত ছুটে যাওয়ার আশংকায় নির্ধারিত ওয়াক্তের পূর্বে ফজরের সাথে বাকী সব ছালাত জমা করা যাবে না (উছায়মীন, মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ১২/২১৬; বিস্তারিত দ্রঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) পৃ. ১৪০, ১৮৮)।
কুরআন-হাদীছের বর্ণনামতে ইয়াজূজ-মাজূজের মত বিশাল জনগোষ্ঠী কিয়ামতের পূর্বে প্রকাশ পাবে। অর্থাৎ তারা এ দুনিয়াতেই আছে। অথচ বিজ্ঞানীরা এখনো তার কোন সন্ধান জানে না। এর ব্যাখ্যা কি?
ইয়াজূজ-মাজূজ সম্প্রদায় আদম (আঃ)-এর বংশধর (বুখারী হা/৪৭৪১, মুসলিম হা/২২২)। কুরআনের বর্ণনামতে, যুলক্বারনাইন নামক একজন প্রতাপশালী শাসক তাদেরকে পৃথিবীর অজ্ঞাত কোন স্থানে প্রাচীর দিয়ে আটকিয়ে রেখেছেন (কাহফ ১৮/৯৪–৯৮)। তবে তারা বর্তমানে ভূপৃষ্ঠে না ভূগর্ভে আছে সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। কেবল বলা হয়েছে যে, ক্বিয়ামতের প্রাক্কালে তাদের পুনরাবির্ভাব ঘটবে। আর তারা উচ্চভূমি থেকে ছুটে আসবে (আম্বিয়া ২১/৯৬)। এছাড়া বহু ছহীহ হাদীছে তাদের ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে। অতএব এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা আবশ্যক। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হওয়া বা না হওয়া এখানে ধর্তব্য বিষয় নয়।
স্ত্রী যদি স্বামীকে রাগ করে বলে, আমি তোমার মা, আমার নিকট থাকবে না। এটা যিহার সাব্যস্ত হবে কি? হলে কাফফারা দিতে হবে কি?
স্ত্রীর পক্ষ থেকে যিহার হয় না। জমহূর বিদ্বানগণ এব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন (ইবনু কুদামা, আল–মুগনী ৮/৪১; ইবনু রুশদ, বিদায়াতুল মুজতাহিদ ৪/৪৩৭, ফাতাওয়া মারআতুল মুসলিমাহ ২/৮০৩)। কেউ করলে তা অবান্তর ও বাজে কথার অন্তর্ভুক্ত হবে, যা মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। মুমিন অনর্থক কথা বা কাজ থেকে বিরত থাকবে (মুমিনূন ২৩/১–৩)। অতএব এ ধরনের কথাবার্তা থেকে বিরত থাকা যরূরী (দ্রঃ নায়লুল আওত্বার ৮/৬০ ‘যিহার’ অধ্যায়)।
তবে এতে কাফফারা ওয়াজিব হবে। আয়েশা বিনতে ত্বালহা মুছ‘আব বিন যুবায়েরকে বিবাহের পূর্বে এরূপ কথা বললে ছাহাবায়ে কেরাম তাকে কাফফারা দিতে বলেন (ইরওয়াউল গালীল হা/২০৮৯, ছালেহ আলুশ শায়েখ, আত–তাকমীল পৃ. ১৪৫, সনদ ছহীহ; মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ৩৪/৯)। আর কসমের কাফফারা হ’ল ১০ জন মিসকীনকে খাদ্য প্রদান করা অথবা একজন দাসকে মুক্ত করা কিংবা তিনদিন ছিয়াম পালন করা (মায়েদাহ ৫/৮৯)।
ইমাম আবু হানীফা সম্পর্কে বলা হয় যে, তিনি স্বপ্নে ৯৯ বার আল্লাহকে দেখেছেন। একথার কোন সত্যতা আছে কি?
উক্ত ঘটনা নাজমুদ্দীন গীত্বী (মৃ. ৯৮১ হিঃ) নামক জনৈক ছূফী সনদবিহীনভাবে উল্লেখ করেছেন, যার কোন ভিত্তি নেই (ইবনু আবেদীন, রাদ্দুল মুহতার ১/৫১)। উল্লেখ্য যে, স্বপ্নে আল্লাহকে দেখা সম্ভব নয়। স্বপ্নে যদি কেউ আল্লাহকে দেখেছে বলে কল্পনা করে, তা কখনই বাস্তব নয়। কেননা আল্লাহর অনুরূপ কিছুই নেই, যা দ্বারা আল্লাহকে কল্পনা করা সম্ভব (আন‘আম ১০৩; আ‘রাফ ৭/১৪৩; শূরা ১১; শায়খ বিন বায, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ৬/৩৬৭–৬৮)। সুতরাং একজন মহামতি ইমামের নামে এরূপ দাবী অতীব অন্যায় ও গর্হিত অপরাধ।
নিজের জমিতে যদি কেউ সোনা বা অন্য কোন মূল্যবান বস্ত্ত পায়, তবে শারঈ বিধান অনুযায়ী তার মালিক কে হবে? জমির মালিক, না সরকার?
এ বিষয়ে বিদ্বানদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে বিশুদ্ধ মতে, জমির মালিকই এই সম্পদের মালিক হবে, কেননা সে জমির অন্তুর্ভুক্ত সবকিছুরই মালিক (ইবনু কুদামা, মুগনী ৩/৫৬; উছায়মীন, তা‘লীকাতু ‘আলাল কাফী ৩/২১)। এই সম্পদ নিছাব পরিমাণ হ’লে মালিককে যাকাত দিতে হবে। তবে যদি সোনা বা রূপা রিকায বা খনির সম্পদ হয়, তাহ’লে সরকার বা রাষ্ট্রকে পাঁচ ভাগের এক ভাগ দিতে হবে (বুখারী হা/১৪৯৯; মিশকাত হা/১৭৯৮)।
রাসূল (ছাঃ)-এর কবরকে রওযা বা মাযার বলা যাবে কি?
‘রওযা’ ও ‘মাযার’ উভয়টি আরবী শব্দ। প্রথমটির অর্থ বাগান এবং দ্বিতীয়টির অর্থ যিয়ারত বা পরিদর্শনের স্থান। উক্ত শব্দদ্বয়কে মূলতঃ পথভ্রষ্ট ও ভ্রান্ত আক্বীদাসম্পন্ন একদল মানুষ তাদের পীর–আউলিয়াদের কবরস্থানের বিশেষ গুরুত্ব বুঝানোর জন্য ব্যবহার করে থাকে। অথচ নববী যুগ থেকে শুরু করে ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনে ইযাম থেকে রাসূল (ছাঃ)-এর কবর বা অন্য কারু কবরকে এরূপ রওযা বা মাযার নামে অভিহিত করার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। অতএব রাসূল (ছাঃ)-এর কবরকে এসব বিদ‘আতী নামে আখ্যায়িত করা যাবে না।
স্মর্তব্য যে, রাসূল (ছাঃ)-এর কবর নয় বরং হাদীছে রাসূল (ছাঃ)-এর মিম্বার ও তাঁর বাড়ির মধ্যবর্তী স্থানকে রিয়াযুল জান্নাহ বা জান্নাতের বাগান বলা হয়েছে (বুখারী হা/১১৯৫; মিশকাত হা/৬৯৪)।
ইমাম ইবনুল জাওযী ও তাঁর কিতাব ‘তালবীসু ইবলীস’ সম্পর্কে জানতে চাই।
তাঁর পুরো নাম জামালুদ্দীন আবুল ফারাজ আব্দুর রহমান বিন আলী ইবনুল জাওযী। তিনি ৫১০ হিজরীতে বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৫৯৭ হিজরীতে সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। তিন বছর বয়সে তিনি পিতৃহারা হন এবং ইয়াতীম অবস্থায় চাচার নিকট লালিত–পালিত হন। তিনি তাফসীর, হাদীছ ও ফিক্বহসহ বিভিন্ন বিষয়ে পান্ডিত্য অর্জন করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক (যিরিকলী, আল–আ‘লাম ৩/৩১৬)।
তাঁর রচিত অন্যতম প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘তালবীসু ইবলীস’ যার অর্থ শয়তানের প্রতারণা। গ্রন্থটিকে তিনি তেরটি অধ্যায়ে ভাগ করেছেন। যেখানে শয়তানী প্রতারণার বিভিন্ন ধরন, প্রকারভেদ ও তা থেকে আত্মরক্ষার উপায়সমূহ বর্ণনা করেছেন। প্রথমতঃ তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মানহাজকে আঁকড়ে ধরার গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন এবং বিদ‘আতীদের নানা ভ্রান্ত বিশ্বাসের অপনোদন করেছেন। অতঃপর তিনি ইহূদী, খৃষ্টান, অগ্নিউপাসক প্রভৃতি অমুসলিম দল–উপদল এবং বিভিন্ন বাতিল ফের্কা তথা খারেজী, ছূফী ও রাফেযী প্রভৃতি সম্প্রদায়ের উপর শয়তানী প্রতারণা সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন।
সবশেষে তিনি হকপন্থীগণ দ্বীনের বিধি–বিধান পালনের ক্ষেত্রে কিভাবে শয়তানের ফাঁদে পড়ে এবং নেকী থেকে মাহরূম হয়, সে ব্যাপারে হৃদয়গ্রাহী ও সূক্ষ্ম আলোচনা পেশ করেছেন। সার্বিকভাবে গ্রন্থটি দ্বীন গ্রহণের পর দ্বীনের উপর ইস্তিক্বামাত বা দৃঢ় থাকার ক্ষেত্রে অনন্য একটি গ্রন্থ হিসাবে বিবেচিত।
জনৈক ব্যক্তি নিজ সন্তানের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় মেয়েটি অবৈধ সন্তান জন্ম দিয়েছে (নাঊযুবিল্লাহ)। এক্ষণে উক্ত সন্তানের হুকুম কী হবে?
যেনায় লিপ্ত হওয়া মহাপাপ। কোন মাহরামের সাথে যেনায় লিপ্ত হওয়া ততোধিক বড় মহাপাপ। আদালতের মাধ্যমে এই ধরনের যেনাকারকে রজম (পাথর মেরে হত্যা) করা আবশ্যক। আর এক্ষেত্রে অবৈধভাবে জন্ম নেওয়া সন্তানটি মায়ের দিকে সম্পৃক্ত হবে এবং মায়ের পরিচয়ে পরিচিত হবে (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, আবূদাঊদ হা/২২৬৫; মিশকাত হা/৩৩১২, ৩৩২০; ফাতাওয়া ইসলামিয়াহ ৩/৩৭০)।